অমলিন মালিনমালা

Spread the love

“লিখতে কিছু বলছ আমায় /
লিখবো কি যে ভাই /
কিছু লেখার মতো নেইকো বিদ্যে /
শুধু অভিনয়ের বড়াই।”

সজল মিত্রের অটোগ্রাফের খাতায় এমনই লিখেছিলেন পর্দার রানী রাসমনী, অভিনেত্রী মলিনা দেবী। মাত্র আট বছর বয়সে অভিনয়ে হাতেখড়ি হলেও, দর্শক তাঁকে চিনতে শুরু করেছিল ‘কপালকুন্ডলা’ আর ‘চাষার মেয়ে’ ছবির মধ্যে দিয়ে। তার আগে কখনও জাহাঙ্গীর নাটকে বালক দারা, তো কখনও শ্রীকান্ত সিনেমায় ছোট্টো চরিত্রে অভিনয়। পথটা মসৃণ ছিল না।

দিন বদল শুরু হলো, নিউ থিয়েটার্স-এ যুক্ত হলেন মাসিক বেতনে, নির্মলা চরিত্রে অভিনয় শুরু করলেন প্রেমাঙ্কুর আতর্থীর সবাক ছবি ‘চিরকুমার সভা’তে। উর্দু শিখেছিলেন, সাড়ে চার দশক কাজ করেছেন বাংলা, হিন্দি ও উর্দু ছবিতে। কাজ করেছেন প্রমথেশ বড়ুয়া, সত্যজিৎ রায়, নির্মল দে, চিত্ত বসু, অমর মল্লিকের মতো পরিচালকদের সঙ্গে। ১৯৫৫-তে ‘রানী রাসমনী’ ছবিতে নামভূমিকায় অভিনয় তাঁকে দিয়েছে তাঁর কাজের সেরা স্বীকৃতি। টানা দু’দশক ছবিতে ও থিয়েটারে অভিনয় করেছেন রাণীমায়ের চরিত্রে।মলিনাদেবী ও গুরুদাস ব্যানার্জি মিলে তৈরী করেছিলেন, এম. জি. এন্টারপ্রাইজ।পরশপাথর ছবিতে মূখ্য ভূমিকায় অভিনয় ও সারে চুয়াত্তরে তুলসী দাসের বিপরীতে দাপুটে অভিনয় আপামর বাঙালির মন জিতে নিয়েছিল। গিরিশ সংamaসদ থেকে পান ‘নাট্যাধীরাজ্ঞী’ উপাধি। থিয়েটারে তাঁর অবদানের জন্য ১৯৭৬-এ পান “সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমী” পুরষ্কার।

একাধারে সকলের সুবিধা-অসুবিধার মঞ্চ ‘মহিলা শিল্পী মহল’ তৈরীতে মুখ্য ভূমিকা নেওয়া থেকে উত্তম কুমার প্রতিষ্ঠিত শিল্পী সংসদের সভাপতিত্ব, অন্যদিকে অভিনেত্রী হতে রূপ-জৌলুসের স্টিরিওটাইপি দুমরে মুচরে দেওয়া; বাংলা ছবির সাবালকত্বের ইতিহাসের পরতে পরতে জড়িয়ে আছেন মলিনমালা, ওরফে মলিনাদেবী।

 

Share Your Perception

Back to top