আমাদের সমাজ জাত, ধর্ম, লোকাচার, বর্ণ, খাদ্যাভ্যাস—বিভিন্ন শর্তে বিচিত্র। সমাজের সকল পর্যায়েই বিচিত্রতার রূপ বিবর্তিত হতে থাকে। অঞ্চল থেকে দেশ, দেশ হয়ে দুনিয়া সব ধীরে ধীরে সংক্ষিপ্ত, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কৃতির প্রতিনিধি হয়ে ওঠে। বঙ্গভঙ্গের প্রয়োজনে-আয়োজনে, ৭ই জুলাই ১৯০৫, উদেশ্যপ্রণোদিতভাবে ভারতবর্ষের শিরায় শিরায় বিষক্রিয়ার মতো ছড়িয়ে দেওয়া হল একটি ভুল ব্যাখ্যা। রাতারাতি ‘বিচিত্র’ শব্দের বদলে সিংহাসনে বসলো ‘বিভক্ত’ শব্দটি। এই বিষক্রিয়ার দরুন অবক্ষয় পাঁজরে পাঁজরে বীভৎস রুপ নিতে থাকল। তার থেকে বাঁচতে, আমাদের দেশকে অখণ্ড রাখতে এক অদৃশ্য স্বপ্নের গ্রাফে চৈতন্য ও ভালবাসাকে মাপকাঠি করে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মানুষের সাথে মানুষকে জুড়ে এক মানব শৃঙ্খল তৈরি করলেন, দেশ জুড়ে পালিত হল অরন্ধন, উৎসব হয়ে উঠল রাখিবন্ধন।
২০২১—এখন সব কিছু হাতের কাছে, বড্ডো বেশি কাছে বোধ হয়! রাখিপূর্ণিমা আজ বিজনেস টাইকুনদের কাছে সেলস টার্গেটে পৌছনোর, শিল্পীর কাছে দক্ষতা প্রদর্শনের আর অনলাইন বিপণনে আর্টিফিশিয়াল ইনটেলীজেন্সকে কাজে লাগিয়া ক্রেতাকে আকৃষ্ট করার সুযোগ। তবে এপার-ওপার বাংলার যে আত্মার টান, মায়া—সব থেকে যায় বকুল পিসিদের অন্ধ চোখে, পিঠের কাঁঁটাতারের দাগ হয়ে যায় ঠাট্টার রসদ। গাজীপুরের বসতভিটে বট-অশ্বথের লীলাক্ষেত্র, শহীদ হয় অন্ধকারে। “ব্রাহ্মণ চণ্ডাল চামার মুচি, একি জলেই সব হয় গো শুচি…” আবার মনে করাতে হবে না তো দেশকে! কেও অন্ধকারের জাল বুনছে না তো সিংহাসনে বসে, আবার!
Share Your Perception